রক্তিম চাঁদের রাত
- ১৪:৩২
- কার্যক্রম প্রতিবেদন
- ৩১১৩
মানুষ স্বাভাবিক ঘটনার পারিপার্শিকতায় এত বেশি অভ্যস্ত যে, প্রকৃতির যে কোনো ব্যতিক্রমী ঘটনাই তাকে উৎসুক করে তোলে। তাই তো চিরচেনা চাঁদ পৃথিবীর ছায়ায় ঢাকা পড়ে তার রঙ পাল্টে যেন মানুষকে আবারও চমকে দিয়েছিল গত ১৬ জুন, ২০১১ তারিখে। মেঘলা আকাশের ফাঁকে ফাঁকে চাঁদও যেন উঁকি দিয়ে এ আগ্রহ আরও উস্কে দিচ্ছিল। সূর্যগ্রহণ মানুষের মনে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করলেও চন্দ্রগ্রহণ সম্পর্কে মানুষের আগ্রহে এত দিন একটু কমতি ছিল বৈকি। কিন্তু বিজ্ঞানচর্চা ও বিকাশের লক্ষ্যে বিজ্ঞান সংগঠনগুলোর তৎপরতার কারণে মানুষ আরও বেশি করে এসব মহাজাগতিক ঘটনায় আকৃষ্ট হচ্ছে। মূলত প্রায় প্রতিবছরই চন্দ্রগ্রহণের ঘটনা ঘটে থাকে। তা ছাড়া চন্দ্রগ্রহণ এত বেশি সময় ধরে চলে, যে কারণে এর প্রতি আগ্রহ কম দেখা যায়। তারপরও মানুষ দিন দিন মহাজাগতিক ঘটনার প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। তার প্রমাণ মিলল চন্দ্রগ্রহণ পর্যবেক্ষণে বিভিন্ন বয়সী মানুষের ভিড় দেখে।
কসমিক কালচার এই দিনটিকে সামনে রেখে ঢাকা এবং বরিশাল শহরে জনসাধারণের সচেতনতার লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়েছে। এছাড়া ছিল ১৫ জুন রাত থেকে সরকারি ব্রজমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের বিজ্ঞান ভবনের মাঠে পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ পর্যবেক্ষণের জন্য ক্যাম্প। বরিশালের মহাবৃত্ত ফোরামও এই আয়োজনে শামিল হয়েছিল। যদিও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে পুরোপুরি পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয়নি কিন্তু এটা ছিল অভিনব অভিজ্ঞতা। ক্যাম্পে পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ দেখতে বৃষ্টি উপেক্ষা করেও অনেক তরুণ একত্র হয়েছিল।
পূর্ণ গ্রহণ চলার একপর্যায়ে রাত দেড়টার পর আকাশ যথেষ্ট পরিষ্কার হয়ে যায়। গ্রহণের শুরুতে ম্লান চাঁদের অবয়ব দেখা গেলেও ধীরে ধীরে চাঁদে এক ধরনের রক্তিম আভা দেখা গেছে, যা ছিল সচারচর চাঁদের রূপ থেকে ভিন্ন। চাঁদের এসব বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন সাধারণের মনে কৌতূহল সৃষ্টি করেছিল। বৃষ্টির কারণে মানুষ নির্ধারিত পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে শেষ পর্যন্ত উপস্থিত না থাকলেও অনেকেই নিজ বাড়ি বা এলাকা থেকে চন্দ্রগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করেছেন।
কুসংস্কারমুক্ত মন নিয়ে আকাশ পর্যবেক্ষণ, মহাজাগতিক বস্তুকে দর্শনে দেশের মানুষের উদ্দীপনা দেশের ভবিষ্যৎকে অবশ্যই সম্ভাবনাময় করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।