বিজ্ঞানযাত্রা

  • ১৯৯১

 

বিজ্ঞানযাত্রা

কেন ও কিভাবে এই আয়োজন

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিজ্ঞান চর্চা ও বিকাশের প্রধান অন্তরায় হচ্ছে এই বিষয়ে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা ও মানসম্মত উদ্যোগ না থাকা। নতুন প্রজন্মের মাঝে বিজ্ঞান শিক্ষা ও চর্চায় আগ্রহ সৃষ্টি ও বৃদ্ধি করার জন্য প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি বিজ্ঞানভীতি কাটিয়ে উঠে আনন্দ নিয়ে শেখার ও জানার সুযোগ সৃষ্টি করা । কসমিক কালচার শুরু থেকেই এই বিষয়টিকেই যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। তাই শিক্ষার্থীদের জন্য স্কূল/কলেজভিত্তিক এই বিজ্ঞান আয়োজন। বিষয়ভিত্তিক বিজ্ঞান আয়োজনের মাধ্যমে শুধু শিক্ষার্থীদের মাঝে নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে তথ্য উপস্থাপন করাই নয়, বরং আজানাকে জানবার প্রতি তাদের আগ্রহ ও উদ্দীপনাকে আরও বৃদ্ধি করাই আয়োজনের প্রধান লক্ষ্য।

শিক্ষার্থীরা পাঠ্যসূচির বাইরেও বিজ্ঞান আয়োজনের এই আবহে নিজেদেরকে খুঁজে পাবে বিষয়বস্তুর আলোকে। এছাড়াও তার মানসলোকে প্রশ্ন করার যে প্রবণতা তা তাকে আরও তাড়িত করবে আজানাকে জানবার প্রয়াসে। আমরা মনে করি, বিশেষভাবে নতুন প্রজন্মকে এই কর্মকাণ্ডের আওতায় নিয়ে আসতে পারলে তা যুক্তিনির্ভর চিন্তা-ভাবনা ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে বিশেষ সহায়ক হবে। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও সংস্কৃতির মেলবন্ধনের মাধ্যমে মহাবৃত্তীয় সংস্কৃতির পথে এগিয়ে যাবে সমাজ। শিক্ষা কখনোই শুধুমাত্র ক্যারিয়ার গঠনের মাধ্যম নয়, বরং মানুষের মনুষ্যত্ববোধ ও যুক্তিবোধ জাগ্রত করার অন্যতম মাধ্যম।

পূর্ব নির্ধারিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২-৩ ঘন্টা ব্যাপি উন্মুক্ত বিজ্ঞান অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। এই আয়োজনের সাধারণ নাম দেওয়া হয়েছে বিজ্ঞানযাত্রা। আয়োজনে থাকবে:
- বিজ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন পোস্টার, আলোকচিত্র প্রদর্শনী এবং বিভিন্ন বিজ্ঞানীদের কর্ম ও জীবনী উপস্থাপনা
- বিজ্ঞান বিষয়ক তথ্যচিত্র প্রদর্শন
- শিক্ষার্থীদের জন্য বিজ্ঞান বিষয়ক কুইজ/চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা
- নির্দিষ্ট বিষয়ের আলোকে বিজ্ঞান বক্তৃতা
- উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্ব
- টেলিস্কোপে আকাশ পর্যবেক্ষণ ( আকাশ মেঘমুক্ত থাকা সাপেক্ষে/সময় বিবেচনায়)

আয়োজন সম্পন্ন করার জন্য ৩-৪ জনের একটি স্বেচ্ছাসেবক দল থাকবে। আয়োজনের সমস্ত ব্যবস্থাপনা কসমিক কালচার দ্বারা সম্পন্ন করা হবে। প্রতি মাসে কমপক্ষে একটি আয়োজন করা হবে এবং স্কুল/কলেজ নির্বাচনের ক্ষেত্রে তুলনামুলকভাবে গ্রাম ও মফস্বল শহর প্রাধান্য পাবে যেখানে শিক্ষার্থীরা এই ধরনের বিজ্ঞান আয়োজনের সাথে কম পরিচিত।

ফলোআপ

কসমিক কালচার অংশগ্রহণকারী সকল শিক্ষার্থীর তথ্য সংরক্ষণ করবে এবং অনুষ্ঠান পরবর্তীতে তাদের মধ্যে যারা বিজ্ঞান সম্পর্কে জানতে, বুঝতে এবং নিয়মিতভাবে বিজ্ঞান কার্যক্রমে যুক্ত থাকতে আগ্রহী তাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করবে। এদেরকে বিভিন্নভাবে উৎসাহ, অনুপ্রেরণা প্রদান করে বিজ্ঞানঘনিষ্ঠ করে তোলা হবে। একইসাথে তাদেরকে বিজ্ঞান বিষয়ক লেখালেখির প্রাথমিক ধারণা প্রদান ও অনুশীলনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রতিটি আয়োজন থেকে কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীর মধ্যেও বিজ্ঞান সম্পর্কে উৎসাহ গড়ে উঠতে থাকলে তারা নিজেদের যৌক্তিক বিকাশ লাভে অগ্রণী হয়ে উঠবে। পাশাপাশি তারা অন্যদেরকেও যুক্তি ও বিজ্ঞানের আলোয় প্রভাবিত করতে সক্ষম হবে। এই ছোট ছোট প্রয়াসই সম্মিলিতভাবে একদিন বড় ভূমিকা রাখবে বলেই আমরা একান্তভাবে বিশ্বাস করি।